আজ বিশ্ব নারী দিবস প্রশ্ন এখানেই যখন বছরে ৩৬৫ দিন মেয়েরা ছেলেদের সাথে এক লাইনে দাঁড়িয়ে যাচ্ছে জীবনের প্রতিটি লড়াই সেখানে আলাদা করে ৮ ই মার্চ কেন নারী দিবস পালন হয়, সেটাই প্রশ্ন। যখন জন্মের পর থেকে প্রতিটি দিন শারীরিক অক্ষমতা কে দূরে সরিয়ে রেখে জীবন যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে নদীয়ার তাহেরপুরের প্রিয়াঙ্কা পাল, তখন আজ যখন সে মাধ্যমিকের দ্বিতীয় ভাষা ইংরেজি পরীক্ষা দিতে আসে বাবার সাথে হুইলচেয়ারে বসে,সে দিনই কেন খবরের ক্যামেরা তাক করে তার দিকে, কেন সারাটা বছর তার জীবন সংগ্রাম নিয়ে খবর হয়না ?এ সমস্ত প্রশ্ন হয়তো অবান্তর, কারণ এখন ‘দিবস’ পালনের যুগ, প্রতিদিন স্বামী-স্ত্রীর কলহ ভ্যালেন্টাইন ডে তে মুখ লুকায় লাল গোলাপে।

প্রিয়াঙ্কা পাল জন্ম থেকে নানান শারীরিক সমস্যা নিয়ে বেঁচে আছে আর পাঁচটা মেয়ের মতোই। হাটতে পারে না, বসতে পারে না, আর পাঁচটা মেয়ের মতো কথা বলতেও অসুবিধা হয়। কিন্তু হাঁটাচলা কথা বলার বাইরে যে আরও একটা পৃথিবী আছে প্রিয়াঙ্কা উপভোগ করে সেই পৃথিবীটাকে, স্বপ্ন দেখে স্বাভাবিক জীবনের লড়াইয়ের দৌড়ে থাকার, আর তাই প্রতিবন্ধকতাকে মাথায় নিয়ে সে ঘরে বসে থাকতে নারাজ। সেও আজ অন্যান্য পড়ুয়াদের সাথে সাথে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে আলাদা কোনো সুবিধা নিয়েই, যদিও তার হাত অবশ বলে পর্ষদ তাকে অনুমতি দিয়েছে রাইটারের সাহায্য নেওয়ার। বাতকুল্লার ভুবনমোহিনী গার্লস হাই স্কুলের ছাত্রী হিসেবে তার পরীক্ষার সিট পড়েছে অঞ্জনগড় হাইস্কুলে আর সেখানেই তাকে পরীক্ষায় বসার জন্য নিয়ে এসেছেন বাবা ত্রিনাথ কুমার পাল।

জন্মের পরেই চিকিৎসা জনিত ত্রুটি তার মেয়েকে শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী করে দিলেও মানসিকভাবে তার মেয়ে সুস্থ স্বাভাবিক জানালেন বাবা ত্রিনাথ কুমার পাল। আর স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুপ্রতীপ রায় জানালেন নারী দিবসের দিনে দাঁড়িয়ে তিনি গর্বিত তার এমন একজন ছাত্রী থাকায়।