কথায় আছে যে কোনও পুরুষের সাফল্যের পিছনে একজন নারীর ভূমিকা রয়েছে। আবার সংসার সুখের হয় রমণীর গুণে, এই প্রবাদও রয়েছে। কিন্তু সেজন্য নারীর স্বাধীনতা প্রয়োজন। প্রয়োজন ক্ষমতারও। পাশাপাশি সবথেকে জরুরি নারীর আর্থিকভাবে স্বাবলম্বিতার। কিন্তু সার্বিকভাবে নারীদের অবস্থা এ দেশে কেমন। মহিলাদের আর্থিক উন্নয়নের নিরিখে গোটা বিশ্বে ভারতের স্থান ১১২ নম্বরে, আর পিছনে মূল কারণ হল শিক্ষা। এখনও এ দেশে বাল্য বিবাহ রোধ করা সম্ভব হয়নি। আইন রয়েছে। কিন্তু তার ফাঁক গলেই কম বয়সী মেয়েদের বিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে গ্রামেগঞ্জে হামেশাই দেখা যায়, ঘরে মেয়ে থাকলে তাদের পড়াশুনার বদলে বিয়ে দিলেই যেন বেঁচে যান অভিভাবকরা। এক কথায় তাদের তাড়তে পারলেই যেন তারা বেঁচে যান। পাশাপাশি মহিলাদের পিছিয়ে পড়ার পিছনে রয়েছে আরও একাধিক কারণ।

আর সেটাকে সামনে রেখেই সচেতনতা বাড়িয়ে তুলতে কর্মশালা হল মালদহের চাঁচলে। রবিবার চাঁচলের খানপুরে নারীর ক্ষমতায়ন শীর্ষক ওই কর্মসূচির আয়োজন করেছিল খানপুর আজাদ গ্রাম উন্নয়ন সমিতি।বাল্য বিবাহ রোধ কীভাবে সম্ভব তা নিয়ে দীর্ধদিন ধরেই বাসিন্দাদের সচেতন করতে চেষ্টা চালাচ্ছে খানপুর আজাদ গ্রাম উন্নয়ন সমিতি।এদিনও কর্মশালার মূল বিষয় ছিল বাল্য বিবাহ রোধ। কেননা কৈশোরেই বিয়ে হলে তারা পিছিয়ে পড়বে। সঠিকভাবে শিক্ষারও প্সার ঘটবে না তাদের মধ্যে। এই প্রসঙ্গে রাজ্য সভার সাংসদ মৌসম নুর, অভিনেত্রী সাবানা আজমীর মতো কৃতীদের ছবির ক্লিপিংসও কর্মশালায় তুলে ধরা হয়েছিল। মৌসমের বিয়ে হয়েছিল ৩০ বছর বয়সে। প্রকৃত শিক্ষালাভের পর সংসার জীবন শুরু করায় তারা সমাজে কৃতী হয়েছেন। এদিনের কর্মশালায় স্বনির্ভরগোষ্ঠীর মহিলারা ছাড়াও হাজির ছিলেন অধ্যাপক, শিক্ষক থেকে শুরু করে হাজির ছিলেন মহিলাদের উন্নয়নে কাজ স্থানীয় প্রায় সর্বস্তরের মহিলারাও। তাদের কথাতেও বারবার ফিরে এসেছে, স্বাবলম্বি হতে হলে মহিলাদের আগে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বি হতে হবে। আর তা একমাত্র শিক্ষিত হলেই সম্ভব। এদিনের কর্মশালায় হাজির ছিলেন অধ্যাপক ডক্টর মহম্মদ ইসমাইল, মালতীপুরের প্রাক্তন বিধায়ক আলবেরুনী জুলকারনাইন, সিনির প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর রোজিনা খাতুন। এদিন একইসঙ্গে দুঃস্থ মানুষদের জন্য নিখরচায় স্বাস্থ্য পরীক্ষা শিবিরেরও আয়োজন করা হয়েছিল। তাদের বিনামূল্যে ওষুধও দেওয়া হয়।খানপুর আজাদ গ্রাম উন্নয়ন সমিতির সম্পাদক আব্দুর রশিদ বলেন, নারীরা সমাজে আর্খিকভাবে স্বাবলম্বি হলে সমাজ আরও এগিয়ে যাবে। আর সেজন্য জরুরি শিক্ষা। তা নিয়ে মহিলাদের সচেতন করতেই এদিনের কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছিল।
একই সঙ্গে সমিতির তরফে এদিন নিখরচায় স্বাস্থ্য পরীক্ষা শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে রোগীদের চিকিত্সা করেন চিকিত্সক রইসুদ্দিন আহমেদ, নিস্তার আলি ও শেখ সাইদ হোসেন। শতাধিক রৌগীর চিকিত্সার পাশাপাশি তাদের নিখরচায় ওষুধও দেওয়া হয়।