বিশ্বজুড়ে করোনার দাপট আবারো মাথা চাড়া দিলেও ভারতবাসীকে করোনা নিয়ে আতঙ্কে নয় সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা
বর্তমানে অতিমারীর অতিসংক্ৰমনতা কিছুটা কমায় ভারতে ধীরে ধীরে শিথিল করা হচ্ছে বিধি নিষেধ। কমেছে দৈনিক সংক্রমণের হার এবং করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হারও। গত ২৪ ঘন্টায় দেশে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ১,৫৪৯ এবং মৃত্যু হয়েছে মোট ৩১ জনের। গত দুবছরের তুলোনায় বর্তমানে দেশে সংক্রমণের হার সবচেয়ে কম থাকায় , আগামী ২৭ শে মার্চ থেকে দেশে শুরু হতে চলেছে আন্তর্জাতিক বিমান পরিষেবাও। কিন্তু ভারতে সংক্রমণের গ্রাফ মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও চিন,উত্তর কোরিয়া, হংকং, ব্রিটেন, ফ্রান্স, ইতালি, আমেরিকা প্রভৃতি দেশ গুলোতে আবারো বাড়তে শুরু করেছে সংক্রমণ। স্পাইক প্রোটিন পাল্টে ওমিক্রনের নতুন একটি শাখা দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বের এই দেশ গুলিতে, এমনকি গতকালের তথ্য অনুযায়ী হংকং ও দক্ষিণ কোরিয়াতে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ১০ ও ৬.২১ লক্ষ মানুষ ।চিনের একাধিক প্রদেশে আগে থেকে লকডাউন জারি করা হলেও, এক বছরেরও বেশি সময় পার করে শনিবার জোড়া করোনা-মৃত্যুর রিপোর্ট এসেছে চিন থেকে। প্রসঙ্গত, হু’র নিরিখে ৭ থেকে ১৩ মার্চের মধ্যে বিশ্বের সংক্রমণ বেড়েছে প্রায় ৮% এবং নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ১ কোটিরও বেশি। এ বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ( হু ) পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে যে, এখনই অতিমারী শেষের কোন সম্ভাবনা নেই।

তবে কি গোটা বিশ্বের সাথে সাথে আবারো ভারতে আছড়ে পড়তে চলেছে করোনার চতুর্থ ঢেউ? করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে গবেষণা প্রসঙ্গে সপ্তাহ দুয়েক আগেই কানপুর আইআইটির গবেষকরা দাবি করেছিলেন যে আগামী জুন জুলাই নাগাদ ভারতে আছড়ে পড়তে পারে করোনার নতুন ঢেউ। তবে ভেলোর ক্রিশ্চান মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক এবং দেশের প্রথম সারির ভাইরোলজিস্ট টি জ্যাকব জন দেশ বাসীকে খানিকটা স্বস্তি দিয়ে বলেন, চতুর্থ ঢেউ যে আসবেই তার কোনো বিজ্ঞান সম্মত প্রমান নেই যখন, তখন কি হবে বা হতে পারে সে নিয়ে অযথা দুশ্চিন্তার প্ৰয়োজন নেই। কিন্তু চতুর্থ ঢেউ আসার সম্ভাবনা কম হলেও তা অগ্রাহ্য করা উচিত নয়। তবে করোনা যেভাবে বারবার নিজের প্রকৃতি বদল করছে তাতে কড়া নজরদারির সাথে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।করোনার নতুন সংক্রমণ নিয়ে দেশের গবেষকদের মধ্যে মত পার্থক্য থাকলেও দেশের একটা বড় অংশের টিকাকরন হয়ে যাওয়ায় চতুর্থ ঢেউ এলেও তা যে দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা কে ধসিয়ে দেবেনা, সে নিয়ে কোন মত পার্থক্য নেই গবেষকদের মাঝে। কারন দেশে করোনার তৃতীয় ঢেউ চলাকালীন ওমিক্রন ও তার বিএ.২ সব ভ্যারিয়েন্টের দাপট ইতি মধ্যেই দেখে ফেলেছে দেশবাসী, এমনকি দেশবাসীর ৯০% প্রাপ্তবয়স্ক ওমিক্রনে আক্রান্তও হয়েছিল বলে দাবি করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাই কোভিডের চতুর্থ ঢেউ নিয়ে আতঙ্কে নয় সতর্কিত থাকুন।