ভারতে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের পর কিছুকাল যাবৎ সংক্রমণ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসায় ভারতে ধীরে ধীরে স্বাভাবিকের পথে জনজীবন। বর্তমানে দেশে গত ২৪ঘন্টায় সংক্রমিত হয়েছেন প্রায় ১৭৭৮ জন এবং করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৬২ জনের। ফলে আগামী ২৭শে ফেব্রুয়ারি থেকে আন্তর্জাতিক বিমান পরিষেবা শুরুর পরিকল্পনাও করা হচ্ছে কিন্তু ওমিক্রনের নয়া ভ্যারিয়েন্ট বিএ.২ নিয়ে চিন্তিত বিশ্ব। ওমিক্রনের এই নয়া ভ্যারিয়েন্ট ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে চীন, দ : কোরিয়া, ফিলিপিন্স, ভিয়েতনাম, অস্টেলিয়া, ইজরায়েল, ব্রিটেন সহ বিশ্বের বহু দেশে। চীনের শহর জুড়ে আবারো দেখা মিলছে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা, টান পড়েছে কফিনের যোগানেও। কিন্তু বিশ্বের এহেন পরিস্থিতে আশার বাণী শোনাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা, বহুজাতিক ওষুধ তৈরী সংস্থা অ্যাস্ট্রা-জেনেকা’র দাবি তাদের তৈরী ‘ইভুশেল্ড’ এন্টিবডি ককটেল ওমিক্রন বধ করতে সক্ষম। এই ওষুধ প্রয়োগে ইঁদুরের দেহে সাফল্য মেলায় আশাবাদী বিশেষজ্ঞরা। ওয়াসিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা অনুযায়ী, সংক্রামিতের শরীরে করোনা ভাইরাল লোড প্রথম ৪৮ ঘন্টাতেই কমিয়ে দিতে পারে এই এন্টিবডি ককটেল। এই ককটেল এন্টিবডি পরীক্ষামূলকভাবে ওমিক্রনের বিএ ১, বিএ ১.১ এবং বিএ.২ সাব ভ্যারিয়েন্টের ওপর প্রয়োগ করা হয়েছে। দেখা গেছে ইঁদুরের শরীরে শুধু ভাইরাল লোডই কমেনি কমেছে ফুসফুসের প্রদাহও, ফলে সিভিয়ার কোভিডের চিকিৎসায় এ ওষুধ ভালো সারা ফেলবে এমনটাই দাবি গবেষকদের।

যদিও ইমিউনোলজি বিশেষজ্ঞ দীপ্যমান গঙ্গোপাধ্যায় জানান, ওষুধটি আগে মানব দেহে প্রয়োগে সাফল্য লাভ করলে তবেই এ নিয়ে মন্তব্য করা উচিত। যাঁদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তাদের করোনা হলে এই ‘ইভুশেল্ড’ প্রয়োগে ভালো সাফল্য লাভ হবে এমনটাই দাবি করছেন সংস্থার ভ্যাকসিন ও ইমিউন থেরাপির বিষয়ক প্রধান জন পেরেজ। কিন্তু মানুষের ক্ষেত্রে ওষুধটি কতটা সুরক্ষা দিতে পারবে তার জন্য ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ওপর নির্ভরশীল থাকতে হবে বলে মনে করছেন ভাইরোলজি বিশেষজ্ঞ সিদ্ধার্থ জোয়ারদার, তাই ওষুধটিকে ঝুঁকিপূর্ণ রোগীদের ক্ষেত্রে ভরসার উপাদান হিসেবে দেখলেও তা যথেষ্ট সময়সাপেক্ষ বলে মনে করছেন তিনি। সুতরাং মানব শরীরে এই ওষুধের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের আগে এ বিষয়ে আশাবাদী হতে নারাজ বিশেষজ্ঞদের একটা বড় অংশ।