বর্তমানে দেশ জুড়ে অতিমারীর সংক্রমণ কিছুটা নিয়ন্ত্রিত হওয়ায় ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে জনজীবন। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে জারি করা নয়া বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আগামী ৩১শে মার্চ থেকে বিপর্যয় মোকাবিলা আইন প্রত্যাহার করে নেওয়ার পরই অনুষ্ঠিত হতে চলেছে বহু প্রতীক্ষিত ‘কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব’। বিগত কয়েক বছর তারকা খচিত মঞ্চে বেশ জাঁকজমক পূর্ণ ভাবে আয়োজিত হয়ে আসছিল আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। কিন্তু অতিমারীর কারনে গতবছর নবান্নের সভাঘর থেকে চলচ্চিত্র উৎসব’র ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্ধ্যোপাধ্যায় এবং ভার্চুয়াল মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন স্বয়ং বলিউডের বাদশা শাহরুখ খান। গত বছর চলচ্চিত্র উৎসব’র থিম ছিল ‘ দ্য শো মাস্ট গো অন ‘।

এবছর ৭থেকে ১৪ই জানুয়ারির মধ্যে ‘কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব’ হওয়ার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে যায় করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের কারনে। আবার ফেব্রুয়ারিতে পুরভোটের কারনে ফেব্রুয়ারিতেও চলচ্চিত্র উৎসব’র আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। তবে এখন পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় আগামী ২৫শে এপ্রিল থেকে ১লা মে পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ২৭তম ‘কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব’।
এবছরের উদ্বোধনী ছবি হিসেবে ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’, ‘পরশ পাথর’, ‘দেবী’, ‘মহানগর’ প্রভৃতি ছবির নাম মনোনীত হলেও, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইচ্ছানুসারে সত্যজিৎ রায়ের ‘অরণ্যের দিনরাত্রি ‘ ছবিটিকে বেছে নেওয়া হয় উদ্বোধনী ছবি হিসেবে। সত্যজিৎ রায়, চিদানন্দ দাসগুপ্ত, মিকলোস জানকসো প্রমুখ সিনেমা জগতের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের জন্মশতবর্ষ ছিল গত বছর, এবার তা উদযাপনের জন্য তাদের তৈরী ছবি-তথ্যচিত্রের সাথে সাথে প্রদর্শিত হবে তাদের ওপর তৈরী ডকুমেন্টরি ও ছবি। সেই সঙ্গে দেখানো হবে জ্যঁ-লুক গদার’র পিওরোখ লে ফু। এছাড়াও প্রতিবারের মতো এবারেও থাকবে দেশবিদেশের নানা উন্নতমানের চলচ্চিত্র। এবারের ২৭তম চলচ্চিত্র অনুষ্ঠানের জন্যে ৭১টি দেশের মোট ১৬৯৮টি ছবির আবেদন জমা পড়লেও তা থেকে বেছে নেওয়া হয়েছে ১০৩টি ফিচারফ্লিম, ৫৮টি শর্ট ফ্লিম ও ডকুমেন্টরি। মোট ১০টি ভ্যেনু জুড়ে ২০০টি শো’র মাধ্যমে পালিত হবে এই চলচ্চিত্র উৎসব,যার প্রতিযোগিতামূলক বিভাগে থাকছে মোট ৫৯টি ছবি।

রাজ্য সরকারের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়েছে যে, কোভিডের সমস্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে আরো স্মার্ট ডিজাইনের মাধ্যমেই অনুষ্ঠিত হবে এই অনুষ্ঠান। এবং ডেলিগেট রেজিস্ট্রেশন সহ উৎসবের কর্মসূচি যথা সময়ে জানানো হবে। টানা দুবছর চলচ্চিত্র উৎসবের দায়িত্বে থাকা পরিচালক-প্রযোজক তথা বিধায়ক রাজ চক্রবর্তী এবারের চলচ্চিত্র উৎসবের আয়োজনের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চাইলেও, এই দায়িত্বে এখনো তিনিই থাকছেন।