দক্ষিনেশ্বরের মা ভবতারিনীর মন্দিরের আদলে তৈরী উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বনগাঁ মহকুমার গাড়াপোতার সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দির।৪৩৫ বছরের প্রাচীন এই ত্রিমোহনা মন্দির ঘিরে রয়েছে বহু জনশ্রুতি।এককালে ইচ্ছামতীর হাত ধরে বয়ে যাওয়া যে কপোতক্ষ নদী আজ কালের নিয়মে পরিণত হয়েছে বাওড়ে, কথিত আছে বাংলার বারো ভূঁইয়াদের মহারাজ যশোহরের রাজা বিক্রমাদিত্য একসময় সেই কপোতক্ষ নদীপথ ধরে বাণিজ্যে যাওয়ার পথে নৌকাডুবি হওয়ায় নদী গর্ভে তলিয়ে যায় তাঁর অগাধ ধন সম্পদ।ধন সম্পদ হারিয়ে যখন মহারাজের দিশেহারা অবস্থা তখন হৃত ধন সম্পদ ফিরে পাওয়ার জন্য মহারাজকে স্বপ্নাদেশে মন্দির তৈরী করে মায়ের পূজার নির্দেশ দেন স্বয়ং মা।তাই মায়ের আদেশ মতো পঞ্চমুন্ডীর আসন তৈরী করে সেখানে ঘট স্থাপন করে পুজো শুরু করেন মহারাজ।

বাংলা সাহিত্যের বিভিন্ন লেখকের গল্পে উল্লেখ আছে এই চার শতাব্দী প্রাচীন গারপোতা সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দিরের। লোককাহিনী অনুসারে, ডাকাত সর্দার ভবানী পাঠক এবং দেবী চৌধুরানীরও আগমন হয়েছিল এই মন্দিরে তবে তখন এ জায়গা ছিল জঙ্গলাকীর্ণ। গবেষক ঐতিহাসিকরা মনে করেন যে, অনুমানিক ১৫৮৫ সালে এই মন্দির প্রতিষ্ঠিত হলেও তা পরিত্যক্ত অবস্থায় পরে ছিল বহু বছর। আজ থেকে প্রায় ৭০-৮০বছর আগে বাংলাদেশের এক কুখ্যাত ডাকাত বিনয় ব্রহ্মচারীর হাতে ডাকাতির সময় এক শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটলে তিনি পেশা পরিত্যাগ করে রূপান্তরিত হন মাতৃসাধকে এবং এই পঞ্চমুন্ডীর আসনে মাতৃ মন্দির নির্মাণ করেন। তবে বর্তমানে মায়ের কৃপায় ভক্তদের অনুদানে প্রায় ৪ কোটি টাকা ব্যয় গড়ে ওঠে বর্তমান দেবালয়টি। এমনকি এখানে সম্প্রতি শুটিং হয়েছে বহু বাঙালি ছবির। কিন্তু স্থানীয় মানুষদের মতে মন্দিরে সদা জাগ্রত মা সিদ্ধেশ্বরী তাই শুদ্ধ মনে মায়ের কাছে প্রার্থনা করলে তা পূরণ হবে অবশ্যই।